Ticker

6/recent/ticker-posts

ঘরে বসে সহজেই অনলাইনে আয় করার ১৫ টি সেরা উপায়


ঘরে-বসে-আয়-করার-উপায়


প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বেড়েছে মানুষের কর্ম পরিসর। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা অনেকেই সেগুলোর সদ্ব্যবহার করতে পারছিনা শুধুমাত্র সঠিক ধারণা নেই বলে। কত লোক বেকার বসে আছে, চাকরির অভাবে হতাশায় ভুগছে, দরিদ্র জীবনযাপন করছে, অথচ হাতে রয়েছে একটা স্মার্টফোন। অনেকেই আবার অভাবে না থাকলেও স্মার্টফোন আর ল্যাপটপ এ অনর্থক কাজে প্রচুর সময় নষ্ট করছে, যেটুকু কাজে লাগিয়ে অনায়াসেই কিছু ইনকাম করা যায়, জীবনযাত্রার মান আরো একধাপ উন্নত করা যায়। 
আবার অনেকেই আছেন যারা অনলাইনে ইনকাম করতে মরিয়া, কিন্তু ভুল পন্থা অবলম্বনের কারণে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে অবশ্য পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবের সাথে সাথে রাতারাতি লাখ টাকা ইনকাম করার তাড়াহুড়া ও অনেকাংশে দায়ী। 
অনলাইনের যেসব প্ল্যাটফর্ম ও রিসোর্স এর মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে আয় করা যায় , সেগুলো নিয়েই আমরা আলোচনা করব। যাতে করে সবাই পরিস্কার প্রাথমিক ধারণা পান এবং কেউ প্রতারণার শিকার না হন।


১. ফ্রিল্যান্সিং

অনলাইনে আয়ের প্রসঙ্গ আসলে সবার প্রথমে যে শব্দটি উচ্চারিত হয় সেটা হল ফ্রীল্যান্সিং (Freelancing)। এটিই অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। বর্তমানে ফ্রীল্যান্সিং এর মাধ্যমে আমাদের দেশের হাজার হাজার মানুষ ঘরে বসে আয় করছে। এই মাধ্যমটিকে আরো জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সরকারি বেসকারি বিভিন্ন সংস্থা কোর্স ও ট্রেনিং এর ব্যবস্থা ও করছে। অনেকেই ফ্রিল্যানসিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন, অনেকেই আয় করছেন লাখ লাখ টাকা।  


ফ্রিল্যান্সিং মূলত চাকুরীর মতই। বিদেশের বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের কাজ করিয়ে নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লোক নিয়োগ করে। আর যাদের চাকুরী প্রয়োজন তারা নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী এসব কাজের জন্য আবেদন করে। এই দুই পক্ষের সংযোগ ঘটায় Upwork, Fiverr, Freelancer এর মত কিছু মিডিয়াম বা মাধ্যম ( এর বিনিময়ে তারা কোম্পানি গুলো থেকে কিছু টাকা পায়)। এসব মিডিয়ামে কোম্পানিগুলো কাজের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আর চাকুরী সন্ধানীরা নিজেদের সকল যোগ্যতার বিবরণ সহ এই প্ল্যাটফর্মে একাউন্ট খোলেন। নিজের যোগ্যতা ও কিছু কাজের স্যাম্পল দিয়ে প্রোফাইল সাজান। তারপর বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞপ্তি গুলো ঘেঁটে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাজ নির্বাচন করে তাতে বিড (Bid) করেন অর্থাৎ নিলামের আবেদন করেন। আবেদনে কাজটি কত ডলারের বিনিময়ে করতে পারবেন সেটাও উল্লেখ করে দিতে হয়।

অনেক প্রতিযোগীর ভিড়ে যার প্রোফাইল ও পারিশ্রমিক এর পরিমাণ কোম্পানির পছন্দ হয়, কোম্পানি সেই নির্দিষ্ট কাজের জন্য তাকে নিয়োগ দেয় (Hire করে)। যে নিয়োগ দেয়, তাকে বলা হয় ক্লায়েন্ট। ক্লায়েন্টের বেঁধে দেয়া একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আপনাকে কাজ শেষ করে দিতে হবে। কাজটি যদি ক্লায়েন্টের পছন্দ না হয়, তাহলে পুনরায় করতে হতে পারে। আপনার কাজের মান অনুযায়ী ক্লায়েন্ট আপনাকে "রেটিং" দিতে পারে, যা আপনাকে পরবর্তীতে আরো কাজ পেতে সাহায্য করবে। কাজটি ক্লায়েন্ট কর্তৃক অনুমোদিত হলেই আপনি পেমেন্ট বা পারিশ্রমিক পাবেন। সাধারণত PayPal সহ নির্দিষ্ট কিছু অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম এর মাধ্যমে এই পেমেন্ট করা হয়। আপনি কাজের অভিজ্ঞতা অনুসারে ঘণ্টায় ৫ ডলার থেকে শুরু করে ১০০ ডলার ও আয় করতে পারেন। মাসিক আয় নির্ভর করবে আপনি দৈনিক কত ঘণ্টা কাজ করছেন এবং আপনার প্রতি ঘণ্টার পারিশ্রমিক কত সেটার উপর। 

এবার আসা যাক কোন ধরনের কাজ আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে করতে পারবেন সে কথায়। বিস্তারিত বলতে গেলে হাজার হাজার কাজের নাম বলা যাবে। কিছু উদাহরণ দেওয়া যায়: রাইটিং ( কন্টেন্ট রাইটিং, ব্লগ রাইটিং, রিভিও রাইটিং, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, একাডেমিক রাইটিং, কপিরাইটিং ইত্যাদি) , ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, টাইপিং, অনুবাদ, প্রোগ্রামিং/ কোডিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সহ আরো অনেক কিছু। দুনিয়াতে কাজের কত রকমফের ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রবেশ করলেই বুঝি টের পাওয়া যায়!

এগুলো সব ফ্রিল্যানসিংয়ের অন্তর্ভূক্ত হলেও বেশ কয়েকটির বিবরণ এই লেখাতেই পাবেন। কিছু কিছু কাজ আবার ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে না করে অন্য ভাবেও করা যায়।  


২. নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি

ফ্রিল্যান্সিং মূলত অন্যের অধীনে কাজ করা। যারা সেটা না করে নিজে কিছু করতে চান তাদের জন্য ভাল একটি অপশন হল নিজের একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি। এগুলো কিভাবে করবেন তার বিবরণ নিচে দেওয়া হল: 


ক) ওয়েবসাইট তৈরি

নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করা এখন আর আহামরি কঠিন কাজ নয়! ওয়েবসাইট হতে পারে অনেক কিছু নিয়ে। কোন বিষয়গুলোতে আপনি এক্সপার্ট সেগুলো নিয়েই ওয়েবসাইট তৈরি করুন। এটা হতে পারে লেখালেখির কিংবা বিজনেস ওয়েবসাইট। কিভাবে বানাবেন কি নিয়ে বানাবেন তার পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা নিয়ে ইউটিউবেও অনেক টিউটোরিয়াল পাবেন। সেগুলো দেখে একটি মোটামুটি মানের ওয়েবসাইট আপনি বানিয়ে নিতে পারবেন। আর যদি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে ডেভেলপার দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন অথবা নিজেই একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের কোর্স করে শিখে ফেলতে পারেন প্রফেশনাল কাজ।

বহুব্রীহি
ওয়েবসাইট তৈরি করা শিখুন 
আপনার ওয়েবসাইট এ যখন প্রচুর দর্শক বা পাঠক আসবে তখন আপনি গুগল এডসেন্স কিংবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এগুলো নিয়ে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা দর্শক যত বেশি হবে, আপনার আয় ও তত বেশি হবে।

খ) ব্লগিং 

লেখালেখির সাথে যুক্ত হওয়ার সদিচ্ছা থাকলে আপনি Google এর  Blogger.com কিংবা  WordPress ব্যাবহার করে বিনামূল্যে একটি ব্লগ তৈরি করতে পারেন। লেখালেখি করার অভ্যাস থাকলে নিজেই লিখতে পারেন, আর না থাকলে একজন রাইটার রাখতে পারেন! অবশ্য লেখার হাত ভালো হলে নিজেই একটি শর্ট কন্টেন্ট রাইটিং কোর্স করে উন্নত মানের ব্লগ বা ওয়েবসাইট কন্টেন্ট লেখা শুরু করে দিতে পারেন। 


ব্লগার এর মাধ্যমে ব্লগ তৈরি করা খুবই সহজ, এমনকি আপনি মোবাইল দিয়েও ব্লগ খুলতে পারবেন । কিন্তু ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে হলে আপনাকে শুধু এগুলি তৈরি করলেই হবে না। ব্লগে ক্রমগত লিখে যেতে হবে। যে বিষয়ে আপনি পারদর্শী, সে বিষয়ে ভাল মানের লিখা পোস্ট করতে থাকতে হবে। প্রথম ২-৩ মাস বা তার বেশি সময় হয়তো কোন আয় করতে পারবেন না, কিন্তু বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করে যেতে হবে। নিরাশ হয়ে বসে না থেকে নিত্যনতুন আর্টিকেল লিখা চালিয়ে যাবেন। একসময় দেখবেন, আপনার নতুন আইডিয়া, জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও সাবলীল লেখনীর টানে প্রচুর ভিজিটর আপনার ব্লগে আসছে। তখনই আপনি গুগল অ্যাডসেন্স কিংবা অন্য মাধ্যম ব্যবহার করে এই ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।

৩. Google AdSense থেকে অর্থ উপার্জন

বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর একটি হলঃ Google AdSense. এই Advertisement program টি স্বয়ং Google  দ্বারা পরিচালিত যা ইউটিউব অথবা ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। আপনার ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট এ যদি প্রচুর দর্শক বা ভিজিটর থাকে এবং একে একটি ভাল অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেন, তাহলে Google AdSense এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 
গুগল আপনার ওয়েবসাইট / ব্লগ/ ইউটিউব চ্যানেল এর মান যাচাই করে এডসেন্স এর জন্য অনুমোদন দিবে কিনা নির্ধারণ করবে। অনুমোদন পেলে আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে গুগল বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। ভিজিটররা সেই বিজ্ঞাপনগুলিতে ক্লিক করলে প্রতি ক্লিকের জন্য গুগল আপনাকে টাকা দিবে। এই পেমেন্ট অবশ্য ডলার ভিত্তিক হবে।

Home-devices
Smart Home Devices from BD-Shop


আপনার কন্টেন্ট ইউনিক এবং ভাল মানের হলে গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে তেমন বেগ পেতে হবে না। একবার approve হয়ে গেলে আপনি অনেক দিন যাবৎ নিশ্চিন্তে আয় করে যেতে পারবেন । ভাল কন্টেন্ট এর ভিজিটর ও বেশি হবে, তাই বিজ্ঞাপনে ক্লিক ও বাড়বে। একটি ব্লগ, ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেল থাকলেই এই পদ্ধতিতে আপনি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। 

তবে একটা কথা না বললেই নয়। গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনার ব্লগ বা চ্যানেলে কি বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে সেটা আপনি কন্ট্রোল করতে পারবেন না। তারা তাদের ইচ্ছামত বিজ্ঞাপন দেখাবে। এক্ষেত্রে আপনি শুধু শত শত বিজ্ঞাপনের ক্যাটাগরী এর মধ্যে সীমিত সংখ্যক ক্যাটাগরী ব্লক করে দিতে পারবেন। আপনার ব্লগে কি বিজ্ঞাপন দেখবেন সেটা আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে চাইলে সেক্ষেত্রে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সহ আরো কিছু উপায় রয়েছে।


৪. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও মূলত ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে আয়ের একটি মাধ্যম। আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের Affiliate Marketing Program এ যুক্ত হলে সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিজ্ঞাপন তাদের দেওয়া লিংক এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে যুক্ত করতে পারবেন। সেই লিংকে ক্লিক করে যদি কেউ কোন পণ্য কিনে, তাহলে আপনি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন। কমিশনের পরিমাণ এক এক কোম্পানির এক এক রকম। সেটা ৩% থেকে ২০% পর্যন্ত ও হতে পারে। যত বেশি ক্রেতা আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে পাঠাবেন, আপনার আয় তত বেশি হবে।

High-speed-router
High Speed Router
বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি ব্লগ বা ওয়েবসাইট ছাড়াও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সুযোগ দিচ্ছে। আপনি নিজের ফেসবুক পেজ বা পার্সোনাল একাউন্ট দিয়েও এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। পণ্য যে কোন ভাবে (কোম্পানির পলিসির মধ্যে) বিক্রি করতে পারলেই আপনাকে কমিশন দেওয়া হবে। 
আশার ব্যাপার হলো, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য এখন আর বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের বেশ কিছু কোম্পানি এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম চালু করেছে। যেমন: BdShop, Bohubrihi Online Course, Robi 10 minute school ইত্যাদি।


৫. ইউটিউব

লেখালেখিতে যারা উৎসাহ বোধ করেন না, কিন্তু ক্যামেরা নিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন অথবা ভিডিও সম্পাদনায় পারদর্শী তারা আয় করার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে পারেন ইউটিউব কে। ইউটিউব চ্যানেলে নিত্যনতুন আইডিয়া নিয়ে ভিডিও বানিয়ে এখন অনেকেই লাখ টাকাও আয় করছেন। তবে ব্লগিং এর মত এক্ষেত্রেও মাথায় রাখতে হবে, কোন বিষয়ে মানুষ ভিডিও দেখতে চায়, কিংবা কি দেখালে আপনি দর্শক ধরে রাখতে পারবেন। সেরকম বিষয় খুঁজে নিয়ে তার উপর ভাল মানের সৃজনশীল ভিডিও বানাতে হবে। তাহলে খুব দ্রতই আপনার ইউটিউব চ্যানেল দর্শকপ্রিয় হবে আর আপনি আয় শুরু করতে পারবেন। সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা, ভিডিও দেখার সময় ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে প্রতি হাজার "ভিউ" হিসেবে গুগল আপনাকে অর্থ প্রদান করবে। 

YouTube-Gear
ইউটিউব সামগ্রী কিনুন

এছাড়া ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয়ের উৎস হিসেবে আপনি গুগল এডসেন্স বা মনিটাইজেশন বা এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যাবহার করতে পারেন। এছাড়া আপনার চ্যানেল জনপ্রিয় হলে বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে স্পন্সরশিপ অফার করতে পারে, যেটা হতে পারে আয়ের বড় উৎস। কিন্তু ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর ভাল মানের ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করার পাশাপাশি আপনাকে ইউটিউব চ্যানেলের মার্কেটিং ও করতে করতে হবে, যাতে করে আপনার চ্যানেলটি পৌঁছে যায় হাজারো দর্শকের কাছে। 


৬. গ্রাফিকস ডিজাইন

সৃজনশীল চিন্তাধারার ব্যাক্তিদের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন খুব ভাল প্ল্যাটফর্ম। হাতে একটি ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে বিভিন্ন মার্কেট প্লেস থেকে আয় করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সার গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে পারেন। দক্ষ  গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা মার্কেটপ্লেসগুলোতে তাদের করা ডিজাইন দিয়ে রাখেন, যেখান থেকে তাদের আয় হয়। একই ডিজাইন অনেকবার বিক্রি হয়, এতে করে তারা একটি ভাল ডিজাইন দিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় করতে পারেন। তাছাড়া অনেক ওয়েবসাইটে গ্রাফিক্স এর কাজ বিক্রয় করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখুন সবচেয়ে সহজ কোর্স করে


৭. জরিপ, সার্চ ও রিভিউ

অনলাইনে বিভিন্ন জরিপ করা হয়, যেগুলোতে অংশগ্রহণ করলে টাকা দেওয়া হয়। এছাড়াও অনলাইন সার্চ ও প্রোডাক্ট রিভিও (পণ্যের পর্যালোচনা) লিখার মাধ্যমেও আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কাজ করার সময় আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য কিংবা ব্যাংক একাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দিতে হতে পারে। তাই অবশ্যই সতর্ক হতে হবে, যেন কোনভাবে তথ্য হ্যাক হওয়ার সুযোগ না থাকে। কাজ শুরু করার আগেই কোনটি প্রকৃত কাজ আর কোনটি স্ক্যাম তা যাচাই করা আবশ্যক।


৮. অনুবাদ

আপনি যদি ইংরেজির পাশাপাশি অন্য যে কোন একটি ভাষা ( যেমন: স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, আরবি, জার্মানসহ অন্যান্য ভাষা ) ভালোভাবে জেনে থাকেন, তাহলে অনুবাদের ওয়েবসাইট গুলোতে গিয়ে বিভিন্ন ডকুমেন্ট অনুবাদ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ইংরেজি থেকে এসব ভাষায় কিংবা এই ভাষাগুলো থেকে ইংরেজিতে - দুটোই করার সুযোগ আছে। আয়ের পরিমাণ ও নেহায়েত কম নয়! ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে খুঁজলেই অনুবাদের কাজ পাবেন।

৯. কপি টাইপিং

অনলাইনে আয় করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ কিন্তু জনপ্রিয় মাধ্যম হল কপি টাইপিং। বহুদিন যাবৎ শীর্ষ দশটি চাহিদাসম্পন্ন কাজের মধ্যে এর অবস্থান এবং দিন দিন এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। কপি টাইপিং কর্মী হিসেবে আপনাকে হাতে লেখা আর্টিকেল কে দেখে টাইপ করে সম্পাদনার উপযোগী করতে হবে অথবা এলোমেলো তথ্য থেকে গোছানো ডকুমেন্টে রূপান্তর করতে হবে। এক্ষেত্রে  ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে নির্দিষ্ট বাজেটের প্রজেক্টে কাজ করতে পারবেন অথবা ঘণ্টা ভিত্তিক কাজের সুযোগ পাবেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর বাজারে কপি টাইপিং করে আয় করতে হলে অবশ্যই আপনাকে দ্রুত ও নির্ভূল টাইপিং এ এক্সপার্ট হতে হবে। 

১০. কনটেন্ট রাইটিং

নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগে লেখালখি ছাড়াও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ও কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে আয় করার সুযোগ আছে যদি না আপনার লেখালেখির হাত ভাল থাকে। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি করে আয় করার এখন অনেক বেশি সুযোগ আছে। ইংরেজি ভাষার আর্টিকেল এর চাহিদা তুঙ্গে হলেও এখন বাংলা কন্টেন্ট এর ও বাজারে চাহিদা তৈরি হচ্ছে। তাই আপনি সাবলীল লেখার ভঙ্গি রপ্ত করতে পারলেই এই খাত থেকে আয় করতে পারবেন। ক্লায়েন্ট এর চাহিদা ও নিয়মকানুন মেনে নির্দিষ্ট সাইজের কন্টেন্ট লিখে দিলে, আপনার লেখার মান ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে ক্লায়েন্ট আপনাকে বেতন প্রদান করবে। লেখার বিষয়বস্তু ক্লায়েন্টই নির্ধারণ করে দেয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে।

কন্টেন্ট রাইটিং শিখুন 


১১. ওয়েব ডিজাইন

অনলাইনের কাজের ক্ষেত্রে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন কাজের মধ্যে একটি হলো ওয়েব ডিজাইনিং। আয়ের পরিমাণ ও তুলনামূকভাবে বেশি। একটি প্রজেক্ট এ ২০,০০০থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। প্রায় সকল কোম্পানির ই ওয়েবসাইট থাকে এই সময়ে। এসকল ওয়েবসাইট তারা ওয়েব ডিজাইনার এর মাধ্যমেই ডিজাইন করিয়ে থাকেন। তাছাড়া এসব ওয়েবসাইট এর পরবর্তী আপডেট(হালনাগাদ) করার কাজেও ওয়েব ডিজাইনার এর সাহায্য প্রয়োজন হয়। তাই ওয়েব ডিজাইনারদের কাজের অভাব হয় না। তবে ওয়েব ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে কোডিং ও ডিজাইনিং দুটোতেই দক্ষ হতে হবে। ভাল মানের ওয়েবসাইট বানাতে পারলে আয় ও অনেক বেশি করতে পারবেন।

ওয়েব ডিজাইনিং শিখতে পারেন এই কোর্স এর মাধ্যমে


 ১২. প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে 

ইংরেজি, ফিজিক্স, বায়োলজি বা গণিতের মত বিষয়ে পারদর্শিতা থাকলে আপনি অনলাইনে এ সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর প্রদানের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান দিতে পারেন। এই উত্তরগুলো যদি সঠিক ও যথার্থ হয়, তাহলে অনলাইনের কিছু কোম্পানি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে তাদের সাইটে জয়েন করার জন্য। পরবর্তীতে আপনি তাদের জন্য কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে একটু বুদ্ধির প্রয়োগ করতেই হবে আপনাকে। মেধাবী  ও চালাক ব্যাক্তিরাই কেবল এ পন্থায় উপার্জন করতে পারে।


১৩. ডেটা এন্ট্রি

কপি টাইপিং এর মতই আরেকটি সহজ অনলাইন জব হলো ডাটা এন্ট্রি। যদিও সহজ কাজে আয় ও তুলনামূলক কম হয়, তবে ছাত্রছাত্রী বা চাকুরীজীবীদের পড়াশুনা ও চাকরির পাশাপাশি কিছু বাড়তি আয়ের মাধ্যম হিসেবে এটি অবশ্যই ভাল। ইন্টারনেট অটোমেশন এর কারণে অবশ্য এই কাজের চাহিদা একটু কমেছে। তবে দক্ষতা থাকলে আপনি অবশ্যই প্রতিযোগিতার মাঝেও কাজ পাবেন। কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে ও টাইপিং স্পীড ভাল হলে আপনি এ কাজটি সহজেই করতে পারবেন।

ডাটা এন্ট্রি শিখুন সবচেয়ে সহজ উপায়ে


১৪. অনলাইন ব্যবসা

বর্তমানে ঘরে বসে লাখপতি হওয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো অনলাইন ব্যবসা। আপনার হাতে কিছু পুঁজি ও একটি স্মার্টফোন থাকলেই ব্যবসায় নেমে যেতে পারেন। অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক বেশি পুঁজির ও প্রয়োজন হয়না অনেক ক্ষেত্রে। প্রয়োজন যুগোপযোগী ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের সঠিক কর্মপন্থা। অনেকেই এখন হুটহাট করে ব্যবসা শুরু করে দিচ্ছেন ঠিকই , কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে টিকে থাকতে পারছেন না। সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করে ধৈর্য সহকারে লেগে থাকতে পারলেই কেবল ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব।
এ বিষয়ে সম্পূর্ণ দিকনির্দেশনা পেতে পড়ুন:

এছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসার মার্কেটিং করতে পারেন। তার জন্য : 

ফেসবুকে ব্যবসার মার্কেটিং শিখুন 


১৫. ডিজিটাল মার্কেটিং

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর হল ডিজিটাল মার্কেটিং। এর জনপ্রিয়তার মূল কারণ হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজগুলো তুলনামূলকভাবে সহজ এবং কম সময়ে করা সম্ভব। ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে অল্প অল্প আয় করতে থাকলেও মাস শেষে আয়ের অংকটা অনেক বড়ই হয়ে যায়। তাছাড়া অনলাইনে ব্যবসার প্রসার ঘটায় দিন দিন ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে কাজের চাহিদা বাড়ছে।

ফেসবুক মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং, অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, গুগল মার্কেটিং, এস ই ও, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং সহ আরও অনেক কিছুর সমন্বয় হল ডিজিটাল মার্কেটিং। 
 
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে শুধু সফল ফ্রিল্যান্সিং ্ক্যারিয়ার গঠন সম্ভব তা নয়, বরং আপনার অনলাইন বিজনেস কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের প্রচার ও প্রসারেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও আপনি কোন ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে সেই সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে দেশীয় নামী দামী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অনলাইন বা অফলাইন চাকুরির জন্যও আবেদন করতে পারবেন। 

সর্বশেষ

আপনি যে পদ্ধতিতেই আয় করতে যান না কেনো, তা কখনোই রাতারাতি হবে না। ধৈর্য সহকারে লেগে থাকতে হবে, বারবার চেষ্টা করতে হবে। তাছাড়া সফলভাবে আয় করতে হলে কিছু না কিছু পুঁজি খাটাতেই হয়, হোকনা সেটা একটা ভাল কোর্সের পিছনেই! 
কেননা, সবার আগে নিজের স্কিল ডেভেলপ করতে হবে, প্রতিযোগিতায় নামার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে, তারপরই সফলতার মুখ দেখবেন। 
তাছাড়া যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন না করলে প্রতারণার শিকার হয়ে সকল পরিশ্রম বৃথা ও যেতে পারে। কাজেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিন এবং পরিশ্রম করুন। ইনশাআল্লাহ, সবার থেকে এগিয়ে থাকবেন আপনিই!


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

6 মন্তব্যসমূহ

  1. ভালো লাগলো আপনার আর্টিকেল পরে, অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন। আপনার সাইট এর লিংক Quora দেখে এসেছিলাম। আমি অনলাইন ইনকাম এর একটি বিষয়ে লিখেছি আশা করি অনেকের জন্য উপকারী হবে
    ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে টাকা উপার্জন

    উত্তরমুছুন
  2. ১২ নাম্বারের কোনো লিঙ্ক জানালে খুশি হতাম

    উত্তরমুছুন
  3. সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এইটা আমার ব্লগস্পট সাইট CTG2BALIADI

    উত্তরমুছুন
  4. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন

Feel free to comment for any query!